Google Analytics অনেক আশা নিয়ে আপনি একটি সাইট করেছেন।তারপর নিয়মিত সুন্দর সুন্দর পোস্ট দিয়ে চলেছেন। কিন্তু যাদের জন্য আপনার এই পরিশ্রম, যাদের পড়ার জন্য আপনি পোষ্টটি লিখছেন তারা কি আপনার পোস্টটি দেখছে বা পড়ছে।
আর যদি কেউ না দেখে , নাই বা পড়ে তাহলে আপনার পরিশ্রমটাই বৃথা। কারন ওয়েব সাইটের প্রাণ হলো ভিজিটর। আর সেই ভিজিটর যেখান থেকে আসে তার মূল সোর্স হলো search engine যেমনঃ (google, bing, Yahoo ইত্যাদি)।
একটি ওয়েবসাইটের ডেটা রিসার্সের একটি জনপ্রিয় টুলস হচ্ছে Google Analytics। এটি গুগলের একটি প্লাটফর্ম যা একটি ওয়েবসাইটের যাবতীয় ডেটা সংগ্রহ করে তা আপনার কাছে প্রতিদিন, সাপ্তাহিক, মাসিক এবং বাৎসরিক রিপোর্ট আকারে প্রকাশ করে।
Google Analytics আপনার ওয়েবসাইটে আসার ভিজিটরদের নিয়ে বিশ্লেষণ করে। একজন ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটে এসে কি করে, কোন পেজ ভিজিট করে, কতক্ষণ ধরে ভিজিট করে ইত্যাদিসহ যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে আপনাকে তা প্রদান করে। এর ফলে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্টগুলো নিয়ে ভাবতে পারেন এবং কিভাবে কনটেন্টগুলো আরো উন্নত করা যায় সেই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পারেন।
আপনার একটি ওয়েবসাইট থাকলে নিশ্চই সেটির এসইও করার প্রয়োজন রয়েছে? কোর্সটিকায় আমরা ওয়েবসাইট এসওই’র নানাবিধ দিকনির্দেশনা ইতোমধ্যে আলোচনা করেছি। যার মধ্যে অন-পেজ এসইও এবং অফ-পেজ এসইও উভয়ই বিস্তারিত আলোচিত হয়েছে। আজ আমরা কথা বলবো Google Analytics সম্পর্কে। জানবো Google Analytics কি, এর কাজ কি এবং এটি ব্যবহারের সুবিধা সম্পর্কে।
একটি ওয়েবসাইটের জন্য এসইও খুবই গুরুত্বপূর্ণ, প্রয়োজনীয় এবং অপরিহার্য বিষয়। আর আপনার ওয়েবসাইটটি যদি হয়ে থাকে ব্লগ ভিত্তিক কিংবা ই-কমার্স রিলেটেড, তাহলে এই এসইও’র প্রয়োজনীয়তা আরো বহুগুণে বেড়ে যায়। আপনি যদি নিয়মিত আপনার ওয়েবসাইটে কনটেন্ট আপলোড করেন, তাহলে আপনাকে SEO শব্দটির সাথে পরিচিত হতে হবে।
কারণ, একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা এবং তাতে নিয়মিত কনটেন্ট আপলোড করাই শেষ কথা না। আপনার তৈরি করা কনটেন্টগুলো ভিজিটরদের কাছে পৌঁছাচ্ছে কি না, সেটা নিশ্চিত করাও অন্যতম প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
Google Analytics সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে আগে এসইও এর বেসিক বিষয়গুলো জানতে হবে। ভালো ধারণা রাখতে হবে অন-পেজ এসইও এবং অফ-পেজ এসইও এর ওপর। যা নিয়ে কোর্সটিকায় অনেক আর্টিকেল রয়েছে। নিচে দেয়া লিংক থেকে আপনি সেই বিষয়ে ধারণা নিতে পারেন।
Google Analytics কি?
একটি ওয়েবসাইটের অফ-পেজ ডেটা রিসার্সের একটি জনপ্রিয় টুলস হচ্ছে Google Analytics। এটি গুগলের একটি প্লাটফর্ম যা একটি ওয়েবসাইটের যাবতীয় ডেটা সংগ্রহ করে তা আপনার কাছে প্রতিদিন, সাপ্তাহিক, মাসিক এবং বাৎসরিক রিপোর্ট আকারে প্রকাশ করে।
Google Analytics আপনার ওয়েবসাইটে আসার ভিজিটরদের নিয়ে বিশ্লেষণ করে। একজন ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটে এসে কি করে, কোন পেজ ভিজিট করে, কতক্ষণ ধরে ভিজিট করে ইত্যাদিসহ যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে আপনাকে তা প্রদান করে। এর ফলে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্টগুলো নিয়ে ভাবতে পারেন এবং কিভাবে কনটেন্টগুলো আরো উন্নত করা যায় সেই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পারেন।
Google Analytics এর কাজ কি?
Google Analytics আপনার ওয়েবসাইটে আসা ভিজিটরদের যাবতীয় কর্মকাণ্ড নিয়ে রিসার্চ করে আপনাকে পূর্ণাঙ্গ এসইওতে সাহায্য করে। এটি ভিজিটরের সংখ্যা, লোকেশন, ব্যবহার করা ডিভাইস ইত্যাদিসহ আরো নানাবিধ তথ্য আপনাকে প্রদান করে। এছাড়াও একজন ব্যবহারকারী কোন সোর্স থেকে এসেছে সে সম্পর্কেও রিপোর্ট প্রদান করে।Google Analytics আপনার ওয়েবসাইটে থাকা প্রতিটি পেজ লোডের সাথে সাথে ভিজিটর সম্পর্কিত ডেটা আপডেট করতে থাকে। পরবর্তীতে সেই ডেটাগুলো আপনাকে রিপোর্ট আকারে প্রদান করে।
এর মধ্যে অন্যতম হল “Sessions”। তখনই একটি Session শুরু হয় যখন কোন ইউজার আপনার সাইটটি ভিজিট করা শুরু করে। কোন ইউজার যদি আপনার ওয়েবসাইটের কোন পেইজে এসে ৩০ মিনিট অবস্থান করে এবং কোন ধরনের এক্টিভিটিস না করে, সেক্ষেত্রে Session টি সেখানেই শেষ হবে । পরবর্তীতে ইউজার যদি সাইটে প্রবেশ করে সেক্ষেত্রে নতুন Session হিসেবে গণ্য হবে।
এক নজরে Google Analytics এর সুবিধাগুলো
১। একটি ওয়েবসাইটে এই মুহূর্তে কতজন ভিজিটর রয়েছেন, তার সংখ্যা জানা যাবে।
২। প্রতিটি ভিজিটর পৃথকভাবে কোন পেজ ভিজিট করছেন বা কোন আর্টিকেলটি পড়ছেন, তা সম্পর্কে জানা যাবে।
৩। প্রতিটি ভিজিটরের লোকেশন অর্থাৎ তিনি কোন দেশ থেকে ওয়েবসাইট ভিজিটর করছেন, সেই তথ্য জানা যাবে।
৪। একজন ভিজিটর কোন ডিভাইস দিয়ে ওয়েবসাইট ভিজিট করছেন, যেমন: কম্পিউটার, মোবাইল নাকি ট্যাব সে সম্পর্কে জানা যাবে।
৫। ভিজিটর কোন মাধ্যমে ওয়েবসাইটে এসেছেন? তিনি কি সোশ্যাল মিডিয়া থেকে এসেছেন? সরাসরি ওয়েবসাইটের লিংক টাইপ করে এসেছেন নাকি গুগল সার্চ থেকে ওয়েবসাইটে এসেছেন? তা বিস্তারিত জানা যাবে।
৬। একজন ভিজিটর কোন ব্রাউজার থেকে ওয়েবসাইটটি ভিজিট করছে (গুগল ক্রোম, মজিলা ফায়ারফক্স, অপেরা, ইউসি ব্রাউজার ইত্যাদি) জানা যাবে।
৭। ওয়েবসাইটে থাকা নির্দিষ্ট কোন পেজ কতবার ভিজিট করা হয়েছে তার সঠিক তথ্য জানা যাবে।
৮। একজন ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটে এসে কতক্ষণ থাকছে তার গড় হিসেব জানা যাবে।
৯। দিনের কোন সময়ে আপনার ওয়েবসাইটে বেশি ভিজিটর থাকে এবং কখন কম ভিজিটর থাকে, তা জানা যাবে।
১০। আপনার ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট সম্পর্কে জানতে পারবেন।
কেন ব্যবহার করবেন Google Analytics?
অফ-পেজ এসইওর ক্ষেত্রে Google Analytics গুরুত্বপূর্ণ এবং অপরিহার্য একটি টুল। আপনার ওয়েবসাইটকে গুগল র্যাঙ্কিং এ শীর্ষে নিয়ে যেতে চাইলে Google Analytics ব্যবহারের বিকল্প নেই। আপনার ওয়েবসাইটে এটি কি কি কাজ করবে, তা তো ওপরের আলোচনা থেকে জানলেন। এবার চলুন জেনে নেই আপনার ওয়েবসাইটে কেন Google Analytics ব্যবহার করবেন?
১. Google Analytics সম্পূর্ণ ফ্রি
বিভিন্ন সময়ে আপনি হয়তো শুনে থাকবেন, “পৃথিবীতে কোনকিছুই ফ্রি না”। কিন্তু Google Analytics এর ক্ষেত্রে এ কথাটি ভুল। আপনি কোন প্রকার অর্থ ব্যয় ছাড়াই গুগলের এই দুর্দান্ত সার্ভিসটি উপভোগ করতে পারবেন। এছাড়াও, এটি আপনাকে আপনার ওয়েবসাইটের কার্যকারিতা আরো বৃদ্ধি করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করে।
অনলাইনে আরো অনেক Analytic টুল আছে যেগুলো প্রাথমিক সময়ের জন্য বিনামূল্যে সেবা দিয়ে থাকে। কিন্তু পরবর্তীতে নির্ধারিত মাসিক ফি পরিশোধ করতে হয়। আবার কোন কোন টুল এককালীন চার্জও নিয়ে থাকে। এগুলি সবাই আপনাকে আপনার ওয়েবসাইটের পারফরম্যান্স সম্পর্কিত চমৎকার সব তথ্য সরবরাহ করতে পারে। কিন্তু আমরা উপলব্ধি করি যে, Google Analytics ডেটা বিশ্লেষণের আরো বেশি বেশি সব তথ্য উপস্থাপন করে। আর তাও কিনা কোন রকমের খরচ ছাড়াই।
২. অটোমেটিক ডেটা সংগ্রহ
আপনি যদি একবার আপনার ওয়েবসাইটটি Google Analytics এ সাবমিট করেন, তাহলে এখানেই আপনার কাজ শেষ। তার পরবর্তী কাজগুলো গুগল আপনাকে করে দেবে। এটি আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটরদের যাবতীয় তথ্য অটোমেটিক সংগ্রহ করে আপনাকে প্রদান করবে।
৩. পছন্দমত রিপোর্ট দেখা
Google Analytics ব্যবহার করে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের পারফরমেন্স নিজের পছন্দমত দেখতে পারেন। আর এজন্য আপনি অনেকগুলো গুগল রিপোর্ট টেম্পলেট থেকে পছন্দ করতে পারেন বা আপনি নিজের কাস্টমাইজড রিপোর্ট তৈরি করতে পারেন।
শুধু তাই নয়, আপনি যে মেট্রিকে আপনার ওয়েবসাইটের ডেটাগুলো দেখতে চান, গুগল আপনাকে সেভাবেই দেখার সুযোগ করে দেবে। পাশাপাশি আপনি যদি প্রতিদিনকার হিসেব চান, তাও দেখতে পারবেন। আবার সাপ্তাহিক, মাসিক এবং বাৎসরিক হিসেবগুলো একসাথে দেখতে পারবেন।
৪. অন্যান্য টুলসের সাথে সহজে Integrate করা
আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইটের বিপরীতে গুগলের অন্যান্য টুলস যেমন: Adsense, Search Console কিংবা Adward ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে আপনি খুব সহজেই উক্ত প্রতিটি টুল Google Analytics এর সাথে Integrate করতে পারবেন। এর ফলে গুগলের অন্যান্য টুলসের তথ্য Google Analytics এর মাধ্যমে এনালাইস করা সম্ভব হবে। যা আপনার উৎপাদনশীলতা আরো বৃদ্ধি করবে।
৫. ভিজিটরদের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে জানা
আপনার ওয়েবসাইটে প্রবেশের পরে একজন ভিজিটর কি করে, কোন পেজে যায় এসকল তথ্য আপনি যেহেতু Google Analytics এর মাধ্যমে পেয়ে যাচ্ছেন, এর ফলে আপনি ভিজিটরদের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে জানতে পারবেন। ফলশ্রুতিতে ভিজিটরদের পছন্দের বিষয়গুলোতে কিভাবে আরো উন্নত করা যায়, তা সম্পর্কে আপনি পদক্ষেপ নিতে পারেন।
যেমন আপনি যদি দেখেন যে ভিজিটররা নির্দিষ্ট কোন একটি আর্টিকেল বেশি ভিজিট করছে অথবা গুগলে বেশি সার্চ করছে, তখন আপনি ওই আর্টিকেলটি পূর্বের থেকে আরো বেশি আকর্ষণীয় করার উদ্যোগ নিতে পারেন। পাশাপাশি সেই আর্টিকেলে নতুন নতুন তথ্য যুক্ত করে সেটিকে আপডেট করতে পারেন।
৬. Bounce Rate পরীক্ষা ও সমাধান
একজন ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা যেমন জরুরী, একইভাবে সে যেন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেই সাথে সাথে বের হয়ে না যায়, তা নিশ্চিত করাও অপরিহার্য। আপনার ওয়েবসাইট থেকে ভিজিটরদের বের হয়ে যাওয়ার মাত্রা আপনি Google Analytics এর Bounce Rate পর্যালোচনার মাধ্যমে জানতে পারবেন।
Bounce Rate পর্যালোচনার মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন, ভিজিটররা আপনার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করছে কিন্তু তারা যা খুঁজছে তা খুঁজে পাচ্ছে না। অতিমাত্রার Bounce Rate এর পিছনে কারণ সনাক্ত করার জন্য আপনি তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে পারেন। এবং এর পরিমাণ যথাসম্ভব হ্রাস করতে পারেন।
৭. পারফেক্ট সোশ্যাল মিডিয়াগুলো টার্গেট করতে পারেন
ওয়েবসাইটের ট্রাফিক রিসার্চের জন্য Google Analytics দুর্দান্ত একটি প্লাটফর্ম। এটি ব্যবহারের ফলে আপনি জানতে পারবেন কোন কোন সোশ্যাল মিডিয়া থেকে আপনার ওয়েবসাইটে সর্বোচ্চ ট্রাফিক আসে। এর ফলে আপনার জন্য সবথেকে ভালো সোশ্যাল মিডিয়াগুলোকে টার্গেট করা সম্ভব হবে।
যেমন আপনি যদি দেখেন যে ফেসবুকে পোস্ট শেয়ার করলে আপনার ওয়েবসাইটে প্রচুর ভিজিটর আসে, তাহলে আপনি ফেসবুকের পাশাপাশি অন্যান্য প্লাটফর্ম নিয়ে আলাদাভাবে চিন্তা করবেন যে কিভাবে সেসব মিডিয়া থেকে আরো বেশি ট্রাফিক নেয়া সম্ভব। যেহেতু ফেসবুক থেকে আপনি ভালো সংখ্যক ট্রাফিক পাচ্ছেন, সেহেতু আপনি অন্যন্য সোশ্যাল মিডিয়ায়ও স্ট্রং পজিশন গড়ে তোলার চেষ্টা করতে পারেন।